Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

Title
বিজয়ের মাস ডিসেম্বর শুরু (২০১৫)
Details

আজ ১লা ডিসেম্বর। বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাসের শুরু। ১৯৭১ সালের এই ডিসেম্বর বাঙালি জাতির জীবনে নিয়ে এসেছিল এক মহান অর্জনের আনন্দ। একাত্তরের ১৬ই ডিসেম্বর পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয় বাংলাদেশ। এদিন বিশ্বের বুকে রচিত হয় এক নতুন ইতিহাস। বাংলাদেশের নামে মানচিত্র রচনা করার ইতিহাস। পাকিস্তানিদের দ্বারা সুদীর্ঘ ২৩ বছরের শোষণ, বঞ্চনা আর অত্যাচার-নির্যাতনের সমাপ্তি ঘটে বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে। তাই ডিসেম্বর যেমনি বীরত্বপূর্ণ তেমনি গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর। স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে কারান্তরিন করে হানাদার বাহিনী। শুরু হয় ইতিহাসের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ। এরপরই শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধাদের পাল্টা প্রতিরোধ। দেশকে স্বাধীন ও মুক্ত করার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে নানা বয়স, শ্রেণি ও পেশার নারী-পুরুষ। ৯ মাস যুদ্ধ শেষে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও ২ লাখ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৬ই ডিসেম্বর আসে মুক্তির স্বাদ। এদিন ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানিদের আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের মাধ্যমে সূচিত হয় বাঙালির বিজয়। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ এবং মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের খবর ভেসে আসতে থাকে চারদিক থেকে। মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাস ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও ডিসেম্বরে বিজয়ের শেষ সময়ে এসে পাকিস্তানি বাহিনী দেশকে মেধাশূন্য করতে এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যায় মেতে ওঠে। তালিকা করে তারা একে একে হত্যা করে দেশের খ্যাতিমান শিক্ষক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, সাংবাদিকদের। তাই বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে প্রতি বছরের ১৪ই ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের শেষ সময়ে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেও শেষ রক্ষা হয়নি হানাদারদের। শেষ পর্যন্ত ১৬ই ডিসেম্বরেই পর্যুদস্ত হতে হয় তাদের। এরপর স্বাধীন স্বভূমে ফিরে আসে ভারতের শিবিরে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করা প্রায় কোটি নর নারী। প্রবাসী মুজিবনগর সরকারও দেশে ফিরে এসে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। প্রতিবছর বিজয়ের মাস ডিসেম্বর এলে জাতি যেমন আনন্দে উদ্বেলিত হয়, তেমনি শোকে মুহ্যমান হয়ে স্মরণ করেন শহীদদের। এবার ১৬ই ডিসেম্বরে পালিত হবে স্বাধীনতার ৪৪তম বছর। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মাসব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও প্রার্থনা, আলোচনা সভা, বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ, র‌্যালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচি। এদিকে আজ ১লা ডিসেম্বরে জাতীয় ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনের সবক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা, অধিকার ও সম্মান নিশ্চিত করার দাবিতে আজ দেশব্যাপী জাতীয়ভাবে মুক্তিযোদ্ধা দিবস পালন করা হবে। দিবসটি পালন উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। আজ সকালে মুক্তিযোদ্ধাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মুক্তিযোদ্ধা শহীদদের স্মরণ, আলোচনাসভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ ও তাদের শৌর্যবীর্যের প্রতি সম্মান জানিয়ে ২০০৪ সালের ১২ই জানুয়ারি রাজধানীর পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ থেকে প্রতি বছরের ১লা ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

Images
Attachments